॥ আবু নাছের ॥
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের করেঙ্গাতলী গ্রামের দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় ফটোগ্রাফার পিয়ালের বেড়ে উঠা।
পিয়াল যেখানে বসবাস করে সেখান থেকে প্রায় ১০কিলোমিটার দূরে একটি স্টুডিও ছিল। স্টুডিওতে ছবি তুলতেন তপন বড়–য়া কাকা নামের একজন। যিনি পাড়ার সকলের ছবি তুলে দিতেন।
যার ছবি তোলার দরকার ছিল চলে আসত বড়ুয়া স্টুডিও’র তপন কাকার কাছে। ছোট্ট পিয়াল ছবি তোলার যন্ত্রটা দেখে অবাক হতেন। কাকার সাথে গল্প করতেন এবং ওই যন্ত্র সম্পর্কে জানতে চাইতো।
পিয়ালেরও খুব শখ ছিল ছবি তোলার। পিয়াল মোবাইল দিয়ে মাঝে মাঝে ছেলেদের নিয়ে ছবি তুলতেন। মোবাইল দিয়ে পাড়ার ছেলেদের নিয়ে কয়েকটা মিউজিক ভিডিও তৈরী করেছে ।
কাজ করতে করতে বুঝতে পারলেন একটি ছবি সঠিকভাবে তুলতে এবং ছবিটিকে সুন্দর করতে পারেন একজন ফটোগ্রাফার। হঠাৎ করেই মায়ের জমানো টাকা দিয়ে ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনে ফেললেন পিয়াল। ছবি তুলতে শুরু করলেন। কারো কাছ থেকে না শিখে নিজেই চেষ্টা করতেন নিজের ছবিটিকে সুন্দর করার জন্য।
একসময় বুঝতে পারলেন একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার হতে হলে একটি স্টুডিও অনেক দরকার। তাই নিজে একটি স্টুডিও দিলেন। বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠান বা বিশেষ দিনের ছবি তুলতে থাকলেন পিয়াল এভাবেই শুরু তার পথচলা। এলাকায় ভালো ফটোগ্রাফার হিসেবে পরিচিত লাভ করলেন।
একসময় ঠিক করলেন তিনি ফ্যাশন এবং মডেল ফটোগ্রাফি করবেন, কারণ এই সময়ে ফ্যাশন ফটোগ্রাফি ধীরে ধীরে বাংলাদেশে ভালো অবস্থান করে নিচ্ছে। নিজের লক্ষ্যকে ঠিক করে শুরু করলেন টেলিভিশন আলোকচিত্রী নিয়ে নির্মিত এটিএন নিউজে টিভি শো ডার্করুম এর বাংলাদেশের একমাত্র টিভি শো পিয়ালের তোলা ৩ বার ছবি দেখিয়েছে ও বিভিন্ন ফটো এক্সজিভিশনে অর্জন করছে পুরুস্কার ও সনদ।
পিয়াল জানান-সর্বপ্রথম ছবি তুলতাম ফোনে এরপর নিজের কষ্টের জমানো টাকায় কেনা ডিএসএলআর মায়ের সহযোগীতা ও ছিলো,
আজ ২ বছর হলো ক্যামেরা হাতে ঘুরোছি বাঘাইছড়ির এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে মিশেছি সাধারন মানুষের সাথে জেনেছি আর বুঝেছি মানুষের জীবন সম্পর্কে ..
সবসময় লক্ষ্য থাকে প্রতিটি ছবির পিছনে গল্প তৈরি করতে সবচেয়ে প্রিয় স্ট্রিট ফটোগ্রাফি আমি ফলো করি লাইফস্টাইল ফটোগ্রাফার জিএমবি আকাশ স্যার কে আর প্রীত রেজা স্যার কে আর শোয়েব ফারুকী স্যার কে।
বর্তমানে আমাদের ফটো পেইজের একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করছি। আর খাগড়াছড়ি ফটোগ্রাফি সোসাইটির প্রধান এডমিন নিজের হাতেই গড়ে তোলা গ্রুফটিতে আমি এই পর্যন্ত ৫টা ফটো এক্সজিবিশন এ অংশগ্রহন করেছি। দেশী-বিদেশী বড় বড় ফটোগ্রাফারদের পাশে নিজের ছবিও স্থান পেয়েছে, ধানমন্ডীর দৃক গ্যালারীতে ১বার জাতীয় শিল্পকলা একাডেমীতে ২বার, সিলেট প্রেস ক্লাবে ১ বার , আর চট্রগ্রাম শিল্পকলা একাডেমীতে ১বার ক্রেস্ট আর সার্টিফিকেট শোভা পাচ্ছে আমার নিজের স্টুডিও তে…….
সবার দোয়া নিয়ে চলতে চাই আর ছবি তোলাকে ভালোবাসতে চাই আরো বেশি আর তরুনদের ভালোবাসাতে চাই ফটোগ্রাফিকে।